ভেলোরে সি এম সি হাসপাতালের আশেপাশের হোটেল ভাড়ার বিস্তারিত

 ভেলোরে হোটেল ভাড়ার বিস্তারিত


আপনি যদি প্রথমবারের মতো সি এম সি হাসপাতালে যাওয়ার চিন্তা করে থাকেন, তাহলে যাওয়ার আগেই ভিসা অ্যাপ্লিকেশনের সময়ই আপনাকে একটা হোটেল অ্যাড্রেস দিতে হবে। আজকের এই পোস্টে আমি ভেলোরের হোটেল বা লজ সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা দেয়ার চেষ্টা করবো। 



সি এম সি হাসপাতাল টি ভারতের তামিল নাড়ু রাজ্যের ভেলোর টাউনে অবস্থিত। এটা বাংলাদেশী রুগীদের কাছে একটা জনপ্রিয় হাসপাতাল। এর চিকিৎসা বিশ্বমানের। খরচ অন্যান্য প্রাইভেট হাসপাতালের তুলনায় একটু কম। তবে এখানে ট্রিটমেন্ট প্রসেস একটু স্লো। যাই হোক, আজকের পোস্টে আমরা সেসব নিয়ে আলোচনা করছি না। আমাদের আজকের আলোচনার বিষয় হোটেল বা লজ। চলুন শুরু করা যাক।



ভেলরের পা রেখেই আপনাকে কোন একটা হোটেল বা লজে উঠতে হবে। আপনার জন্য দুইটা অপশন আছে। 

১। মেইন ক্যাম্পাস বা টাউন ক্যাম্পাসের আশেপাশে উঠা। 

২। রণিপেট ক্যাম্পাসের আশেপাশে উঠা। 


মেইন ক্যাম্পাসের আশেপাশে: 

এটা আপনার জন্য বেস্ট অপশন। কারণ এই পুরো এলাকাটা হচ্ছে সি এম সি কেন্দ্রিক। এই ক্যাম্পাস ১২৫ বছরের পুরোনো। তাই এর আশেপাশের সমস্ত বাড়িঘর, হোটেল, লজ, শপিং মল, কাঁচা বাজার সব কিছুই এই হাসপাতালকে ঘিরে। আর এই হাসপাতালের রুগীদের একটা বিশাল অংশ আসে বাংলাদেশ থেকে, তারপর কিছু অংশ আসে ভারতের পশ্চিম বাংলা থেকে। আর অল্প কিছু সংখ্যক রুগী হলো স্থানীয়। যেহেতু অধিকাংশ রুগীই বাংলাদেশ আর পশ্চিম বঙ্গ মিলিয়ে, এই এলাকায় বাংলা ভাষার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। হাসপাতালের ডাক্তার, নার্স, আশেপাশের দোকান, বাজার, হোটেল সব জায়গায় বাংলা ভাষা বহুল ব্যবহৃত। তামিল বা হিন্দি না জানলেও আপনি এই এলাকায় ভালোভাবেই চলতে পারবেন। তাছাড়া প্রায় প্রতিটা হোটেলেরই ম্যানেজার হয়ে থাকে পশ্চিম বাংলার। তাই মেইন ক্যাম্পাসের আশেপাশে থাকাটাই আপনার জন্য বেস্ট অপশন। এছাড়াও এখানে আপনি আপনার দরকারি মোটামুটি সবই পাবেন হাতের কাছে। 


এবার আসি ভাড়া প্রসঙ্গে। এখানে দুই ধরনের রুম পাওয়া যায়। এসি এবং নন এসি। এসি রুমের দৈনিক ভাড়া সাধারণত ৭৫০-৮৫০ রুপি হয়ে থাকে। আর নন এসি রুমের দৈনিক ভাড়া ৩০০-৩৫০ রুপি হয়ে থাকে। তবে দূরত্ব, পরিবেশ এইসব বিবেচনায় এসি এবং নন এসি সব রকমের রুমেই ভাড়া কম বেশি হতে পারে। 


সুবিধা কি কি পাবেন! রুম বুক করার আগে ভালো ভাবে জেনে নিবেন রান্নার সুবিধা আছে কিনা। সব লজে এই সুবিধা থাকে না। আবার কিছু কিছু হোটেলে রুমের বাইরে রান্না করতে হয়। কিছু কিছু হোটেলে রুমের ভিতরেই থাকে এই সুবিধা। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই চেষ্টা করবেন রুমের ভিতরে রান্নার সুবিধা সম্বলিত রুম নিতে। কারণ রুমের বাইরে রান্না মানে সব রুমের লোকজন বাইরে একসাথে রান্না করবে। গরমে ঘামে ভিজে বাইরে সবার সামনে রান্না করাটা স্বাভাবিকভাবেই একটু বেখাপ্পা লাগবে। আর যদি নিজে রান্না না করে বাইরে খেতে চান, সে ক্ষেত্রে এত কিছু না ভাবলেও চলবে। তবে জেনে রাখা ভালো, সেখানকার খাবার দাবার আমাদের মত না। অনেকেই সেগুলি খেতে পারে না। আমিও পারিনি। তাই আমাকে রান্না করেই খেতে হয়েছে সব সময়। 


রুম ভাড়া ছাড়াও আপনাকে আরো যেসব খরচ সামলাতে হবে। 

১. চুলা ভাড়া: আপনি যদি হোটেলের চুলা ব্যবহার করতে চান, তাহলে আপনাকে দৈনিক ভিত্তিতে চুলার ভাড়া দিতে হবে। এটা সাধারণত দৈনিক ৫-১০ রুপি.

২. পানি বিল: আপনাকে খাবার পানি কিনে খেতে হবে। এখানে পানির জার পাওয়া যায়। 

৩. বাসনপত্র: অনেকে বাসনপত্র বা হাড়ি পাতিল সাথে নিয়ে আসেন না, সেক্ষেত্রে হোটেল থেকে দৈনিক ভাড়ার ভিত্তিতে বাসন পত্র বা হাড়ি পাতিল নিতে পারেন। 


এছাড়াও যেসব বিষয় আপনাকে মাথায় রাখতে হবে তা হলো, এই এলাকার সব হোটেলেই ছাড়পোকা আছে। কোথাও কম, কোথাও বেশি। আর হোটেলে ফ্রিজ আশা করা ঠিক না, সাধারণত থাকে না। সেভাবে প্রস্তুতি নিয়ে আসতে হবে। 


এবার আসি দ্বিতীয় অপশনে: রানিপেটের আশেপাশে থাকা: 

রানিপেত ক্যাম্পাস টা মেইন ক্যাম্পাস থেকে প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। সেখানে এখনো ততটা আবাসন গড়ে উঠেনি। ইদানিং কিছু কিছু হোটেল বা লজ পাওয়া যায়। কিন্তু অসুবিধা হচ্ছে সেখানে আপনি মেইন ক্যাম্পাসের মতো বাংলা ভাষাভাষী লোকজন পাবেন না। আশেপাশে ভালো বাজার নেই। লোকজন কম। সব কিছু মিলিয়ে খুব একটা সুবিধাজনক না। 

Post a Comment

Previous Post Next Post